- ইকিগাই: জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাওয়ার উপায় - September 18, 2020
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম: আসক্তি এবং মুক্তির উপায় - September 9, 2020
- নিজের সেরা সংস্করণ হওয়ার ৭টি সেরা উপায় - August 16, 2020
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেড়ে থাকতে পারছেন না? আষ্টে পৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে আপনাকে সোশ্যাল সাইটগুলো? যদি হ্যাঁ হয়, তবে আপনার কৃত অপরাধের জন্য এখন শাস্তি দেয়া হবে। শাস্তি হিসেবে থাকছে এক মাসের কোয়ারেন্টাইন, তাও আবার কোনোরূপ সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া। কি? বলুন, শাস্তি মঞ্জুর?
নিশ্চয়ই আপনার শরীরের প্রতিটি কোষ ইতোমধ্যেই লেখকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে? নিরীহ লেখকের উপর অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগেই বলে রাখি, আপনাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর কোনো ইচ্ছেই লেখকের নেই। কেননা এই নিবন্ধ পাঠ শেষে আপনি নিজেই সেটি করবেন।
বলেন কি?! হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। পুরোটা জানতে সাথেই থাকুন।
একবার ভাবুন, আপনাকে একটি মাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া থাকতে হবে। এমন কিছু ভাবার সাথে সাথেই আপনার মধ্যে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে, মনোযোগের সাথে লক্ষ করুন। কেউ কেউ হয়তো উত্তেজনায় বলে ফেলতে পারেন, “ইহা অসম্ভব! অমন দিন দেখার আগেই যেন … “। লেখকও চান না আপনাকে অমন দিন সত্যিই দেখতে হোক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আমাদের এমন হাল করে ছেড়েছে যে এখন আমরা খাবার টেবিলে একহাতে ফেসবুক স্ক্রল করি আর অন্য হাতে প্লেটে ভাত মাখি। দুঃখিত, ভুল বললাম; আমাদের মুখ ফোনস্ক্রিনে কবর দিয়ে রাখি। হ্যাঁ, খাবারের সময় হাত ব্যবহার করতেও ভুলে গেছি, পাছে বন্ধুর টেক্সটের রিপ্লাই করতে দেরি হয়ে যায়! এক হাত দিয়ে কত দ্রুতই বা রিপ্লাই করা যাবে! কাজেই হাতে ভাত মাখা যাবে না!
তিক্ত সত্যি এটাই যে, আমরা সোশ্যাল মিডিয়া ডিসট্র্যাকশনের জালে আটকে গেছি। এই ডিসট্র্যাকশন যদি কোনোভাবে আসক্তিতে পরিণত হয়, তাহলেই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে যাবে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি রিসার্চ বলছে – “আমাদের ডিজিটাল জীবনযাত্রা আমাদেরকে আরও বেশি ডিসট্র্যাক্ট করছে, বাস্তব জীবন থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং নিঃশেষিত করে ফেলছে”।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও তরুণ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি
তরুণ ছেলেমেয়েদের মন যেন একটি রহস্য, যেটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম অভিভাবকদের বারংবার বিস্মিত করেছে। একটা সময় ছিল যখন একজন তরুণের প্রথম প্রাধান্য ছিল তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন এবং তার কমিউনিটির একটি অংশ হওয়া। কিন্তু বর্তমানে সেটি রূপ নিয়েছে টাকা এবং ওই যে চার অক্ষরের কী একটি শব্দ আছে না, হ্যাঁ ভাইরাল ! ভিড়ের মাঝে উঁকি মেরে নিজের চেহারা সবাইকে দেখাতেই হবে, আর তার জন্য আমাদের তরুণসমাজ যেন মরিয়া।
বলুন তো, আমি যে আছি সেটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার সবচেয়ে সেরা উপায় কোনটি? লা-জবাব। আমার সকল প্রশ্নেরই দেখছি সঠিক জবাব দিচ্ছেন। টেন পয়েন্টস!
উত্তর হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ঐ সোশ্যাল মিডিয়াই।
ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, টুইটার, পিন্টারেস্ট … … … লিখতে লিখতে লেখক ক্লান্ত, বাকিটা পাঠকই না হয় কষ্ট করে বুঝে নিন। আমরা আটকে যাচ্ছি অন্তর্জালে, যে জাল পেশাদার জুয়াড়ির হাতে তৈরি, একবার আটকে পড়লে নিস্তার নেই। কি, অবাক হচ্ছেন?
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদেরকে ছোটখাটো কিছু উপকার করে থাকতে পারে। গ্র্যাজুয়েশন শেষে আপনি যে ক্ষেত্রেই কাজে যান না কেন, সোশ্যাল মিডিয়া পরিচালনার দক্ষতা আপনার কাজে প্রমোশন পেতে সহায়ক হবে।
কিন্তু আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় এবং ব্যক্তিগত তথ্যের বিনিময়ে এইসব সামাজিক মাধ্যমগুলো আমাদেরকে অতি ক্ষুদ্র কিছু ট্রিট অফার করে থাকে। যেগুলো তারা চুরিসারে প্যাক করে ফেলে বিক্রির জন্য। এর মধ্যে আবার অনেক সোশ্যাল মিডিয়া আছে যারা অ্যাটেনশন ইঞ্জিনিয়ার ভাড়া করে আনে।
তারা চায় তাদের পণ্য যতটা সম্ভব আসক্তি সম্পন্ন করা যায়, তার জন্য তারা লাস ভেগাস ক্যাসিনো গ্যাম্বলিং থেকে জুয়াড়িও ধরে আনে। আমরা যেন এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ি যে আমাদের মনোযোগ, সময় এবং তথ্য চুরি গেলেও বুঝে উঠতে না পারি।
সামাজিক সম্পর্কের অধঃপতন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতি পদে আমাদেরকে আমাদের বাস্তব জীবন থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে চলেছে। ২০০১ সালে গ্যালাপের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী গড়ে একজন আমেরিকানের ৯ জন কাছের বন্ধু আছে। ২০১৩ সালে গ্যালাপের ওই একই সমীক্ষায় সংখ্যাটি ৯ থেকে কমে দাঁড়ায় ২। বাকিরা কোথায় গেলো?
দয়া করে না জানার ভান করবেন না। পরেরবার যখন হোটেলে খেতে বসবেন তখন চারদিকে একবার খেয়াল করে দেখবেন কত জনের মুখগুলো তাদের ফোনস্ক্রিনে কবর দেয়া আছে। মুঠোফোনে যার সাথে তারা চ্যাট করছে বা যার নোটিফিকেশন চেক করতে দেরি হওয়ায় সে বারবার দুঃখ প্রকাশ করছে, সেই মানুষটি যেন তারই পাশে বসে থাকা মানুষটির থেকে শত গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সমীক্ষার ফলাফল
কলফিল্ড এবং বায়ার্সের একটি পরীক্ষা থেকে জানা যায় আমরা দিনে ১৫০ বার আমাদের ফোন চেক করি। প্রতিদিন আমরা ১.৮ বিলিয়ন ছবি ফেসবুকে আপলোড করি যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশের কিছু বেশী। পিউ রিসার্স সেন্টারের মতে ৮১% তরুণই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি পরীক্ষায় দেখা যায়, কাজ বা পড়াশোনার সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার, দক্ষতা বা মনোযোগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আমেরিকান সেন্টার ফর কলেজিয়েট মেন্টাল হেলথের গবেষণা ফলাফল অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সর্বাধিক বিস্তৃত তিনটি রোগের মধ্যে আছে উদ্বিগ্নতা, হতাশা এবং মানসিক চাপ। পিটসবার্গ স্কুল অফ মেডিসিনের একটি পরীক্ষায় গবেষকগণ অধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সাথে উচ্চমাত্রার হতাশার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ডিস্ট্রাকশন একটি বাস্তব সত্য। অস্বীকার করার উপায় নাই। লোকেরা প্রায় ৮০% সময় অনলাইনে ব্যয় করে কোনও কাজ ছাড়াই।
আরও পড়ুন: ব্লকচেইন : শেকলে বাঁধা তথ্যের আদ্যোপান্ত
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসক্তির প্রকৃতি
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার অভ্যাস কোকেন নেয়ার মতোই শক্তিশালী হতে পারে! আপনি যতই এটি ব্যবহার করবেন এটিতে ততই আসক্ত হয়ে পড়বেন। নেটওয়ার্কে থাকাটাও একটি আসক্তি। সবাই ফেসবুকে আছে, আমাকেও থাকতে হবে। যারাই টুকটাক ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মধ্যে ৫৬ ভাগ বিশ্বাস করে তারা যদি না নিয়মিত তাদের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টগুলো চেক করে তবে তারা গুরুত্বপূর্ণ আপডেট মিস করে যাবে। প্রায় ২৭ ভাগ লোকেরা যেই মাত্র তাদের ঘুম ভাঙে তারা তাদের প্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় লগ ইন করে। অবাক লাগারই কথা। কিন্তু গড়ে একজন মানুষ তার জীবনের মোট ৫ বছরের বেশী সময় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে থাকে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে আমাদের কাজের জায়গা এবং ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে?
উৎপাদনশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব


আপনি হয়তো জানেন, সোশ্যাল মিডিয়া আপনার জন্য কত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে, কেবলমাত্র যদি তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়! নতুন ক্রেতা পাওয়া, নিজ বা নিজের প্রতিষ্ঠান বা পণ্যকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া একটি দারুণ উপায়।
কিন্তু ওই যে, সবকিছুরই কিছু না কিছু খুঁত থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি আপনার কাজের ফলাফল এবং উৎপাদনশীলতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই তালিকায় সবার উপরে থাকছে – কাজের সাথে ব্যক্তিগত জীবনের সমন্বয় করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং টুল হওয়ার পাশাপাশি প্রডাক্টিভিটি কিলারও বটে! গবেষকদের মতে কাজের ফলাফল এবং উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়ার সাথে সোশ্যাল মিডিয়া ডিসট্র্যাকশনের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তার উপর আপনি যদি বাড়ি বসে কাজ করেন তবে আপনার জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা আরও সহজ এবং আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়ার কাটিয়ে দিতে পারেন কোনোরূপ উপলব্ধি ছাড়াই।
এভাবে ভাবুন, কত মাস ধরে আপনি আপনার একটি প্রজেক্ট স্থগিত করে রেখেছেন সময়ের অভাব নামক বাজে অজুহাত দিয়ে? আপনি হয়ত নিজের ব্লগ খুলতে চান কিংবা আপনার ব্লগে আরও দুটি নতুন পোস্ট লিখতে চান, কিন্তু আপনি খুব ব্যস্ত কিনা আপনার হাতে সময়ই নেই।
সৌভাগ্যবশত, এখনও খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি আপনার নিজের জীবনের উপর দখল ফিরিয়ে নেয়ার জন্য। বলুন আমাকে কী কী করতে হবে?
খুশি হলাম আপনি পড়ে যাওয়া কুয়ো থেকে উঠে আসার উপায় খুঁজছেন। খুব বেশি কিছুর দরকার হবে না, সামান্য পরিকল্পনা এবং আপনার ইচ্ছেশক্তিই যথেষ্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়
প্রথমত, স্বীকার করে নিন আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত। লজ্জা কীসের? আপনাকে লেখকের কাছে স্বীকারোক্তি দিতে হবে না, নিজেই নিজের কাছে দিন। আপনি যদি অস্বীকার করতে থাকেন, তবে আপনি এই অভ্যাসটি কখনোই ভাঙতে পারবেন না। সোশ্যাল মিডিয়াকে আসক্তির উপাদান হিসেবেই বানানো হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, একটি বাচ্চাকে যেভাবে মায়ের বুকের দুধ ভিন্ন অন্য খাবারে অভ্যস্ত করানো হয়, ঠিক সেভাবে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নিজেকে সরানোর জন্য আচরণগত নীতি মেনে চলুন।
প্রথমে নিজেকে সব রকম মিডিয়ার বিজ্ঞপ্তি, বার্তা চেক করতে দিন, কিন্তু তারপরই সবকিছু বন্ধ করে ফোন সাইলেন্ট করে দিন। ১৫ মিনিটের একটি অ্যালার্ম ঠিক করে দিন, যখন অ্যালার্ম বাজবে তখন ১ মিনিটের জন্য আবার সবকিছু চেক করে নিন। এভাবে কিছুদিন চর্চা করুন যতদিন না ওই ১৫ মিনিটকে ঘণ্টার উপরে না নিয়ে যেতে পারছেন।
তৃতীয়ত, এই কৌশলটি এসেছে গবেষক নাথানেইল ক্লিটম্যানের থেকে, যিনি প্রস্তাবনা করেছেন যে, আমাদের মস্তিষ্ক ৯০ মিনিটের বিশ্রাম-কাজের (রেস্ট-এক্টিভিটি) চক্র মেনে চলে। কেবল ঘুমের সময়ই না, যখন জেগে থাকি তখনও ৯০ মিনিট পর আমাদের মস্তিষ্কের বিশ্রামের দরকার পড়ে। তাই প্রতি ৯০ মিনিট পর আপনার মস্তিষ্কের বিশ্রামের জন্য একটি বিরতি নিন। গান শুনতে পারেন, ব্যায়াম করতে পারেন, নিজের বাগানে খালি পায়ে হাঁটতে পারেন, ধ্যান বা মনঃসংযোগ করতে পারেন।
চতুর্থত, আপনার শোবার ঘর থেকে ডিভাইসগুলোকে দূরে রাখুন। আমরা সারাদিনে যা শিখি, সেগুলো থেকে অপ্রয়োজনীয় তথ্য এবং দৈনিক স্নায়বিক কর্মকাণ্ডের ফলে নিঃসৃত বিষাক্ত বস্তুগুলোকে সরিয়ে ফেলার কাজ সম্পন্ন হয় আমাদের ঘুমের সময়।
আমেরিকান ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন (NSF) এবং মায়ো ক্লিনিকের মতে নীল আলো ছড়ানো এলইডি ডিভাইস ঘুমের জন্য এক নম্বর শত্রু। NSF এর পরামর্শ হচ্ছে ঘুমের এক ঘণ্টা আগে সকল ডিজিটাল মিডিয়া দূরে রাখতে এবং মায়ো ক্লিনিকের পরামর্শ হচ্ছে, রাতের বেলা স্ক্রিন লাইট কমিয়ে দিয়ে চোখ থেকে ১৪ ইঞ্চি দূরে রাখা এবং যখন আপনার ঘুমানোর সময় হবে তখন ডিজিটাল ডিভাইস আপনার রুমের বাইরে রেখে আসা।
এটি করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার নিঃসরণ বন্ধ করা যেগুলো মস্তিষ্ককে উত্তেজিত রাখে এবং পরিবর্তে মেলাটোনিনের উৎপাদন বাড়ানো যেটি আপনাকে বিশ্রাম নেয়ার জন্য প্রস্তুত করে তোলে।
পঞ্চমত, কিছু সীমারেখা নির্ধারণ করে নিন। ঠিক করুন, দিনে কত ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবেন। ধরুন, আপনি ফেসবুকে একজন গ্রাহকের জন্য কাজ করবেন। ঠিক করে নিন এই কাজের জন্য দিনে কত ঘণ্টা আপনার লাগছে। তারপর বিনোদনের জন্য কত ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে চান সেটি ঠিক করে নিন – এটি পুরোই আপনার এখতিয়ার, কিন্তু শুরুর জন্য দিনে ৩০-৬০ মিনিটের বেশি দিবেন না।


ষষ্ঠত, কাট ডাউন। আপনার জন্য দরকারি সঠিক সোশ্যাল মিডিয়াটি খুঁজে নিন, বাকিগুলো বিদায় করে দিন। দুনিয়ায় যত সোশ্যাল মিডিয়া আছে তার সবকয়টাতে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে না।
সপ্তমত, মাঝে মাঝে না বলতে শিখুন। সপ্তাহে একদিনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে না বলুন, পরিচিতদের সাথে দেখা করতে যান, নতুন কোনও বই পড়ুন বা বন্ধুর সাথে হাঁটতে বের হন।
অষ্টমত, অনলাইন কোয়ারেন্টাইন। হ্যাঁ, নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠান। ফ্রিডম, সেলফ কন্ট্রোল বা কোল্ড টার্কির মতো কোনো অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন, এবং সাময়িকভাবে সব সোশ্যাল মিডিয়াগুলো ব্ল্যাকলিস্টে পাঠিয়ে দিন। এর ফলে আপনি আপনার কাজের জায়গায় মনোযোগ দিতে পারবেন।
যদি না জানেন দিনে কত ঘণ্টা সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটান তবে এখানে দেখে নিন – Moment.
জীবনকে পুনরাবিষ্কার
এগুলা শুনতে পাগলাটে লাগতে পারে, কিন্তু বিশ্বাস করুন সোশ্যাল মিডিয়া ডিসট্র্যাকশনকে কাটিয়ে উঠতে পারলে আপনি কম সময়ে আরও ভালো ফলাফল পাবেন। কি দারুণ না? যখন আপনি অফলাইন থাকেন তখন খেয়াল করবেন সবকিছুই কত না সুন্দর লাগে। আপনার সেইসব বন্ধুরা কিন্তু তখনও ফেসবুকেই রয়ে গেছে এবং কারো জীবন আপনার জন্য আটকে নেই। ব্যাপারটা মোটেও এমন নয় যে, আপনাকে এক ঘণ্টা অনলাইনে না পেয়ে মরাকান্না পড়ে গেছে।


তার থেকে বরং নতুন কোনও শখ শুরু করুন বা নতুন কোনও বই পড়ুন। জিমে যান অথবা কিছুদূর হেঁটে আসুন। কোনও বন্ধুকে কল দিন এবং বাইরে থেকে ঘুরে আসুন। ঠিক যেমন এই নিবন্ধের লেখক করে থাকেন। হলের ছ’তলা থেকে বন্ধুকে কল করে ডেকে নিয়ে ভার্সিটি ক্যাম্পাস ঘুরে আসেন। টিএসসির চা কিংবা বুয়েটের পলাশীর মোড় থেকে চিতই পিঠা খেয়ে ঢাকা মেডিকেলের সামনে দিয়ে আবার হলে ফিরে আসেন। আর হ্যাঁ, যাওয়ার আগে লেখক কিন্তু তার ফোনটি হলের রুমেই রেখে যান।
তথ্যসূত্র:
ফিচার চিত্রসূত্র: Addiction Center
একদা সোস্যাল মিডিয়ায় পদচারনা না থাকায় খেতাব পেলাম গেঁয়ো;
আক্ষেপে ছিলাম বড়ো!
কেন নেই! কেন নেই! বন্ধু মহলেও তাই ছিলাম বড় অপ্রিয়!
আজ শামিম ভাইয়ের লেখা পড়ে নিজের কাছে নিজে অবশ্য বড়ই প্রিয়!
অসামান্যের সংস্পর্শে অসামান্য হতেই সোসাল মিডিয়ায় আগমন!
প্রথম বন্ধু অনুরোধ শামিম ভাইয়ের কাছে করতে তাই নিজেকে করিনি দমন!
অসংখ্যা ধন্যবাদ আপনাকে। আশা রাখব এভাবেই অসামান্যের সাথে থাকবেন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। শুভেচ্ছান্তে।
ছবিগুলো এবং লেখা উভয়ই দারুন।
বিরক্ত করব এখন।
“যদি প্রস্তত থাকেন, তবে লেখার বাকি অংশে এগিয়ে যান। ” – ‘প্রস্তুত’
“আপনাকে লেখকের কাছে স্বীকারক্তি দিতে হবে না, নিজেই নিজের কাছে দিন। ” – ‘স্বীকারোক্তি’
“দৈনিক স্নায়ুবিক কর্মকাণ্ডের ফলে নিঃসৃত বিষাক্ত বস্তুগুলোকে সরিয়ে ফেলার কাজ সম্পন্ন হয় আমাদের ঘুমের সময়।” - ‘স্নায়বিক’ ।
ধন্যবাদ আপনাকে। ভুল সংশোধন করে নিয়েছি। সময় নিয়ে ভুল ধরিয়ে দেয়ার জন্য আবারও ধন্যবাদ। আশা করব অসামান্যের সাথেই থাকবেন।