- পাই (π) : এক মহাকাব্যিক অমূলদ সংখ্যার কাহিনি - August 27, 2020
- নিকোলা টেসলা: পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিন্তু অবহেলিত এক প্রকৌশলী - August 21, 2020
কোনও গণিতপ্রেমীকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত সংখ্যা কোনটি? এক কথায় উত্তর আসবে যে, সেটা হল পাই, π।
π = ৩.১৪১৫৯২৬৫৩৫৮৯৭৯৩২৩৮৪৬২৬৪৩৩৮৩২৭৯৫০…
আপনি কি গণিতপ্রেমী? তাহলে ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। উপরের ওই ছাইপাশ সংখ্যাটা আপনার জন্যই লেখা। আসলেই কি এটা ছাইপাশ? কে এই পাই? কেনই বা সে এত বিখ্যাত? চলুন জেনে নেওয়া যাক। ধৈর্য ধরে পুরো নিবন্ধটি পড়লে আশা করি সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
পাই কী?
পাই নিয়ে আলোচনা করার আগে তো পাই কী তা জানতে হবে। পাই এর সংজ্ঞা এখানে দুভাবে দেওয়া হচ্ছে – একটি ধ্রুপদী বা প্রথাগত এবং অন্যটি আধুনিক।
প্রথাগত বা ধ্রুপদী সংজ্ঞা
পাই হল বৃত্তের পরিধি আর ব্যাসের অনুপাত অর্থাৎ 2πr/2r = π
আধুনিক সংজ্ঞা
একক ব্যাসার্ধের একটি অর্ধবৃত্ত যে কোণ ধারণ করে থাকে যার মান পাই রেডিয়ান, তাকে সংক্ষেপে পাই বলে।
একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে এখানে শুধু বৃত্তের কথা বলা হয়েছে, তার আকার সম্পর্কে কিছু বলা হয় নি। তার মানে বৃত্তের আকার হোক সেটি হাতির সমান বা পিঁপড়ার সমান, যেকোন বৃত্তের জন্যই এটা প্রযোজ্য।
পাই আসলে একটি অমূলদ সংখ্যা। তো অমূলদ সংখ্যা আসলে কী?
অমুলদ সংখ্যা বলতে বোঝায় যে সংখ্যাকে কখনো ভগ্নাংশে প্রকাশ করা যাবে না, মানে পুরোপুরি স্বাভাবিক আকারের নয় এমন সংখ্যা। একে তো অমুলদ সংখ্যা, তার উপর এর মান নির্ণয়ের অনেক জটিলতা থাকায় সেই আর্কিমিডিসের পূর্ব যুগ থেকে আজকের প্রায় সব গণিতবিদ পাই এর উপর বুঁদ হয়ে আছে। তাই তো শুধু পাইকে নিয়েই যত গবেষণা হয়েছে অন্য কোন সংখ্যা নিয়ে তার কানাকড়িও হয় নাই । এজন্যই π পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত সংখ্যা।
পাই এর জন্ম
ব্যবিলনীয়রা খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ বছর আগে থেকেই π সম্পর্কে জানত। একটি ব্যবিলনীয় ফলক পাওয়া যায় যেটি সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ১৯০০ থেকে ১৬৮০ সালের মাঝে নির্মিত, সেখানে π এর মান ৩.১২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ১৬৫০ সালে প্রাচীন মিশরের এক বিখ্যাত গাণিতিক নথি, Rhind Mathematical Papyrus থেকে পাওয়া যায় পাইয়ের মান ৩.১৬০৫। শুধু তাই নয়, বাইবেলেও পাই এর ইঙ্গিত রয়েছে। কাজেই বোঝা যাচ্ছে π এর কাহিনি আজকের নয়, সেই প্রাচীন কাল থেকেই তা মানুষকে আকর্ষণ করেছে।


আর্কিমিডিসের ধ্রুবক “π”
পৃথিবীর সর্বকালের অন্যতম সেরা গণিতবিদ আর্কিমিডিসই সর্বপ্রথম π এর মান নির্ণয়ের জন্য যুক্তিনির্ভর একটি উপায় বের করেন। তাই π কে ‘আর্কিমিডিসের ধ্রুবক’ বলে সম্মানিত করা হয়। তিনি একটি যুক্তিনির্ভর পদ্ধতি অনুসরণ করে π এর মান নির্ণয় করেন। এক্ষেত্রে মূলনীতিটি ছিল – কোন বৃত্তের অন্তলিখিত বা পরিলিখিত বহুভূজের বাহুর সংখ্যা যত বাড়ানো যায় তত সেটি বৃত্তের কাছাকাছি চলে যায় । আর আমরা আগেই জেনেছি যে, একক ব্যাসের বৃত্তের পরিধিই হল π (ধ্রুপদী সংজ্ঞা অনুযায়ী)। এখন যদি একক ব্যাসের কোন বৃত্তের অন্তলিখিত এবং পরিলিখিত বহুভূজের পরিসীমা নির্ণয় করা হয়, তবে π এর চেয়ে একটু ছোট আর একটু বড় দুটো মান পাওয়া যাবে অর্থাৎ এখান থেকে π এর আসন্ন মান পাওয়া যাবে। এভাবে আর্কিমিডিস π এর মান নির্ণয়ে ৯৬ ভূজ ব্যবহার করে ২ ঘর পর্যন্ত সঠিক ভাবে মান বের করতে সক্ষম হন।
সূত্র- জ্যামিতির জন্য ভালোবাসা: প্রাণের মাঝে গণিত বাজে (পৃষ্ঠাঃ ২১৬-২১৭)
পাই এর মান নির্ণয়ের অনেক উপায় আছে। কিন্তু আজ এসব উপায় নিয়ে ব্যাপক আলাপ শুরু করলে মজার এই আলোচনাটা বড্ড খটখটে হয়ে যাবে। তাই আপাতত ঐ বিষয়টি যথাসম্ভব সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করা হল।
পাই এর মান নির্ণয়ের কিছু উপায়
যেহেতু বিষয়টা খটমটে করার মোটেও ইচ্ছা নেই তাই আজ শুধু পদ্ধতিরই নাম বলা হবে, বিস্তারিত আলাপ নয়।
সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে হাতে কলমে পরিমাপ করে π এর মান বের করার কিছু উপায় আছে। সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে, বৃত্তাকার কোন বস্তু নিয়ে সেটি খাতায় এঁকে সুতা দিয়ে মেপে পরিধি আর ব্যাসের অনুপাত করে পাই এর মান বের করা। একটু বেশিই সাদামাটা এই পদ্ধতি, কেমন জানি একটা গেঁয়ো গেঁয়ো ভাব! এর চেয়ে আর্কিমিডিসের উপায়টা ঢের উন্নত যেটি উপরেই উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্ভাবনাকেও কাজে লাগিয়ে π এর মান বের করা যায়। বেশ কিছু পদ্ধতি থাকলেও কেউ কি ভাবতে পারে যে সূচের সাহায্যেও পাই এর মান বের করা যাবে?
জি হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, সূচ! ‘বুফনের সূচ’ পদ্ধতিতে সম্ভাবনাকে ব্যবহার করে π এর মান বের করা যায়!!
তবে এর চেয়েও কিছু চমৎকার উপায় আছে। যদি একটি বর্গের ভেতরে একটি বৃত্ত আঁকা যায় তবে তা বর্গের চেয়ে π/4 অংশ কম জায়গা দখল করে। তাহলে সেই হিসেবে ঐ বর্গের ভেতরে যদি কোন বিন্দু রাখা হয় তবে তা ঐ বৃত্তের ভেতরে থাকার সম্ভবনা π/4। এই সম্ভবনার উপর ভিত্তি করেও π এর মান বের করা যায়।
তবে π এর মান বের করার আদর্শ পদ্ধতি হল ধারা ব্যবহার করা। অনেক ধারা থাকলেও এখানে গুটিকতক ধারা নিয়েই কথা বলা হল।
প্রথমেই যে ধারার কথা বলব তা হল ম্যাকলরিনের ধারা। কি চেনা লাগছে নামটা?
যারা উচ্চ মাধ্যমিকে উচ্চতর গণিতে অন্তরজ পড়েছেন তারা নিশ্চয় ম্যাকলরিনের ধারাকে চিনতে পেরেছেন। সেই ধারাকেই ব্যবহার করে নিচের সুত্রখানা পাওয়া যায় যার সাহায্যে পাই এর মান দশমিকের পর কয়েক ঘর পর্যন্ত নিখুঁতভাবে বের করা যায়।


তবে এই ধারাটি বড্ড ধীর। মনে হয় কচ্ছপের সাথে দৌড় দিলেও হেরে যাবে! তাই একটু দ্রুত আর চটপটে একটা ধারার কথা জানা যাক। সেটা হল ভারতীয় গণিতবিদ নিলাকান্থের সিরিজ। ধারাটি নিম্নরূপ:


এই ধারাটিও খুব বেশি চটপটে নয়। তাই এর চেয়ে দ্রুত গতির আরও কিছু ধারার দরকার পড়ল। এমনই একটি ধারা হল রামানুজনের সুত্র। গণিতবিদ রামানুজনের উড়োজাহাজের গতিতে চলমান সুত্রটি হল:


তবে এর চেয়েও কি দ্রুতগতির কোন সূত্র আছে? হ্যাঁ, আলবৎ আছে- চাদনোভস্কির সুত্র।
সেটা আবার কেমন দ্রুত? রামানুজেরটা যদি উড়োজাহাজের গতিতে পাই এর মান বের করে,তবে এটা রকেটের গতিতে বের করে! কি বিশ্বাস হচ্ছে না? চলুন আগে ধারাটি দেখে নেই –


রামানুজনের ধারা দিয়ে প্রতি পদের জন্য π এর মান ৮ ডিজিট পর্যন্ত পাওয়া গেলেও চাদনোভস্কির সুত্র দিয়ে পাওয়া যায় ১৪ ডিজিট! এখন বুঝেছেন কত্ত দ্রুতগামী এ ধারা?
সূত্র- জ্যামিতির জন্য ভালোবাসা: প্রাণের মাঝে গণিত বাজে (পৃষ্ঠা: ২২২,২২৩,২২৮,২৩০,২৩১)
π আসলে কী কাজে লাগে? খায় নাকি মাথায় দেয়?
পাই শুনলেই সুন্দর সুন্দর আপেল পাই, কলা পাই, বেগুন পাই! (আদতেও কি বেগুন পাই হয়? আর হলেও তা খাওয়ার যোগ্য কিনা জানি না!!) ইত্যাদি সুস্বাদু খাবারের কথা মাথায় আসে, তাই না?
ভাইরে এটা সেই পাই না, ওই পাইয়ের কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। কেননা এই পাই খায়ও না মাথাতেও দেয় না।
তাহলে করেটা কী? কাজ কী পাইয়ের? বলছি বলছি, রোসো বাপু!
আমার মাথায় যা আসে তা হল গোলাকার বস্তু মানেই পাই! মানে বিষয়টা কেমন, যেখানেই গোলাকার বস্তু দেখে π , অমনি শুরু হয়ে যায় তার খাই খাই!! শুধু সেখানেই না আরও কত জায়গায় যে এর এই খাই খাই স্বভাব তা বলে শেষ করা যাবে না!
বৃত্ত, বর্গ, উপবৃত্ত, অধিবৃত্ত ইত্যাদির ক্ষেত্রফল, ত্রিকোনমিতি, ক্যালকুলাস, ফাংশন, জটিল সংখ্যা ইত্যাদি কোথায় নেই ওই পেটুক π এর ছোঁয়া!
পদার্থবিজ্ঞানেও আছে π এর অবাধ বিচরণ। কৌণিক বেগ, কৌণিক ত্বরণ, টর্ক, জড়তার ভ্রামক, কৌণিক ভরবেগ, কেন্দ্রমুখি বল, বিভিন্ন বস্তুর আয়তন, ক্ষমতা, মহাকর্ষীয় বিভিন্ন বিষয়, স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক, পর্যায়বৃত্ত গতি, সরলদোলকের গতি, দোলনকাল, তরঙ্গ সহ অসংখ্য বিষয়ে এই π বাবাজি ব্যবহৃত হয়।
এখানে তো মাত্র কয়েকটা বলা হল, হয়ত পাঠক তার চেয়েও পাইয়ের বেশি ব্যবহার বলতে পারবেন।
এইবার বোঝা গেল তো পাই আসলে খায় নাকি মাথায় দেয়?
পাই নিয়ে বিভিন্ন মজার ঘটনা
π নিয়ে মজার ঘটনার আসলে শেষ নাই। তার মাত্র কয়েকটাই এখানে বলা হল।
Π একটি গ্রিক শব্দ হওয়া সত্ত্বেও এটি মিশরীয় সভ্যতার সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে রয়েছে। মিশরীয়রা বিশ্বাস করে যে মিশরের বিশ্ববিখ্যাত বড় পিরামিড, গিজা π এর নীতির উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়েছিল ।
π যেহেতু বৃত্তের সাথে সম্পর্কযুক্ত তাই ৩৬০ এই সংখ্যাটি থাকবেই। আর সেই ৩৬০ সংখ্যাটা পাইয়ের দশমিকের পর ৩৫৯ তম পদে গিয়ে প্রথম পাওয়া যায়! মজার না?
শুধু তাই নয়, প্রথম মিলিয়ন নাম্বারে পাই এ ১২৩৪৫৬ একবারও পাওয়া যায় না! তাহলে চিন্তা করুন কতটা মৌলিক এই সংখ্যাটি ! আর প্রথম মিলিয়ন সংখ্যার মাঝে সবচেয়ে বেশি ১০০,৩৫৯ বার ৫ পাওয়া যায়।
পাইয়ের মান অমুলদ হওয়ায় আসলে এটির কখনোই সঠিক মান পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের হিসাবের মাঝে কিছুটা ত্রুটি থেকেই যায়। তবুও মানুষ এর সঠিক মান বের করার জন্য পাগল।
২০১০ সালে এক জাপানি প্রকৌশলী কোনও সুপার কম্পিউটারের ব্যবহার ছাড়াই পাইয়ের মান দশমিকের পর ৫ ট্রিলিয়ন পর্যন্ত বের করে বিশ্বরেকর্ড করে!! মানুষ কতটা খ্যাপাটে হলে এসব করে ভেবে দেখুন।
শুধু তাই নয়, পাইকে নিয়ে একটা সম্পূর্ণ ভাষাই আবিষ্কার করা হয়েছে!! জ্বি, হ্যাঁ আস্ত একটা ভাষা! সে ভাষার নাম “Pi-Lish”।
ভাষা আবিষ্কার করেও মানুষ ক্ষান্ত হয়নি, সে ভাষায় বই পর্যন্ত লিখে ফেলেছে। সফটওয়্যার প্রকৌশলী মাইকেল কেইথ “NOT A WAKE” নামে মোটামুটি জনপ্রিয় এই ভাষায় বইও লিখেন!! কি অবাক হচ্ছেন এসব শুনে? আরেকটু দাঁড়ান, অবাক হওয়ার পালা এখনো বাকি।
জার্মান-ডাচ গণিতবিদ লুডোলফাইন তার জীবনটাই উৎসর্গ করেছেন এই পাইয়ের জন্য। তবে তিনি মাত্র ৩৬ ঘর পর্যন্ত সঠিকভাবে বের করতে পেরেছিলেন। তাই প্রথম ৩৬ টা সংখ্যাকে তার সম্মানার্থে ‘লুডোলফাইন নাম্বার’ বলে।
২০১৫ সালে পাক্কা ১০ ঘন্টা সময় নিয়ে দশমিকের পর পাইয়ের মানের ৭০,০০০ ঘর পর্যন্ত মুখস্ত বলে গিনেজ বুকে নাম লিখিয়েছেন ভারতের রাজভীর মিনা! তবে আনঅফিসিয়ালভাবে রেকর্ডের মালিক আকিরা হারাগুছি যিনি ২০০৫ সালে দশমিকের পর ১,০০,০০০ এবং ২০১০ সালে ১,১৭,০০০ ঘর পর্যন্ত সঠিকভাবে বলতে পেরেছেন!! যেখানে লেখক নিজে মাত্র ১০০ ঘর পর্যন্ত জানি। বিষয়টা কি চিন্তা করতে পেরেছেন যে তারা কী করেছেন!
π নিয়ে এত মাতামাতি করার জন্য মার্চের ১৪ তারিখকে আন্তর্জাতিক পাই দিবস হিসেবে উৎযাপন করা হয় কারণ মার্চ বছরের ৩য় মাস আর ১৪ তারিখ মিলে ৩.১৪ কে নির্দেশ করে। পদার্থবিদ Larry Shaw যিনি ‘পাই এর যুবরাজ’ বলে খ্যাত তিনি এই দিনে পাই দিবসের উৎযাপন শুরু করেন।
পাই নিয়ে আরও দু-একটা কথা না বললে ভালই লাগবে না।
পাইয়ের প্রথম ১৪৪ ডিজিটের সমষ্টি ৬৬৬ । দার্শনিকগণ এই ৬৬৬ কে শয়তানের চিহ্ন বলেন । আবার দেখা যাচ্ছে যে, ১৪৪ = (৬+৬)*(৬+৬)
কেমন কাকতালীয় না?
π নিয়ে মজা করার জন্য এবার একটি পরীক্ষা করা যাক। প্রথমে ইংরেজি বর্ণগুলো বৃত্তাকারভাবে সাজিয়ে লিখতে হবে। তারপর আয়নার সামনে ধরলে যেসব বর্ণ দেখতে একই রকম সেগুলো কেটে দিতে হবে (যেমন- A, M, U, O, I ইত্যাদি)। এভাবে কাটার পর দেখা যাবে যে সবগুলো বর্ণ ৫টি গ্রুপে ভাগ হয়ে গেছে আর সেগুলোতে বর্ণ সংখ্যা ৩, ১, ৪, ১, ৫ করে আর পাইয়ের আসন্ন মান কিন্তু ৩.১৪১৫।
কি মজা লেগেছে? চেষ্টা করতে পারেন ।
আপনি কি কখনো রাতের আকাশের সেই সাতটি তারা অর্থাৎ সপ্তর্ষিকে ভালো করে খেয়াল করে দেখেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন যে সেগুলা দেখতে অনেকটা পাইয়ের মত! শেষমেশ কিনা মহাকাশেও π এর ছোঁয়া!
π নিয়ে আরও একটু
π অনেক মৌলিক একটি সংখ্যা। সহজে এর মান পাওয়া যায় না। তবে পাইয়ের মানের কাছাকাছি মান পাওয়া যায় এমন কিছু ভগ্নাংশও আছে। যেটি বেশি পরিচিত তা হল ২২/৭ = ৩.১৪২৮৫৭১ … যেটা মাত্র দশমিকের পর ২ ঘর পর্যন্ত সঠিক মান দেয়। আরেকটি আছে যেটি আরেকটু বেশি সঠিক মান দেয়, সেটা হল ৩৫৫/১১৩ = ৩.১৪১৫৯২৯ …
তবে আমার জানা সবচেয়ে বড় ভগ্নাংশটি হল ৭৬৪ সংখ্যা বিশিষ্ট লব ও ৭৬৩ সংখ্যা বিশিষ্ট হর ওয়ালা ভগ্নাংশ যা দশমিকের পর ১৫২৯ ঘর পর্যন্ত সঠিক মান দেয়। ভগ্নাংশটার ছবি নিচে দেওয়া হল
আর ভগ্নাংশটির ফলাফল –
অনেক আলাপই তো হল। শেষ করতে হবে যে এবার। শেষবেলায় তাই পাই প্রেমীদের জন্য পাইয়ের মানের কিছু অংশ দেওয়া হল। গণিতের জয় হোক, জয় হোক π এর।
ফিচার চিত্রসূত্র: Pixabay
তথ্যসূত্র:
- জ্যামিতির জন্য ভালোবাসা: প্রাণের মাঝে গণিত বাজে, সৌমিত্র চক্রবর্তী, অনুপম প্রকাশনী, ISBN নাম্বার ৯৮৪-৭০১৫২-০০০৪-৬, দ্বিতীয় সংস্করণ, জুলাই ২০১০ প্রথম প্রকাশ, পুনর্মুদ্রণ জুন ২০১২
- Live science
- Facts Net
আরও পড়ুন: নিকোলা টেসলা: পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিন্তু অবহেলিত এক প্রকৌশলী
পাই এর মত একটি চমৎকার বিষয় নিয়ে মাশআল্লাহ অনেক সুন্দর করে লেখা হয়েছে।
Thank u Jubair ❤